খাবারে স্বাদ বারানো ছারাও লেবুর আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে। লাবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। যা আমাদের দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ নানান কাজে লাগে। শরীরের কোথাও কেটে গেলে সেই কেটে যাওয়া ঘাওর শুকানোর ক্ষেত্রে লেবুতে বিদ্যমান পুষ্টিগুণ উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।লেবুর চারা রোপন এবং পরিচর্যাও খুব সহজ। বাড়ির ছাদেও খুব সহজে লেবু গাছ লাগানো জায়। সর্বপ্রথম ১৪৯৪ সালে লেবু ফল চাষ করা হয়েছিল।
আসুন লেবুর ১০টি প্রধান উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- স্ট্রোকের ঝুকি কমায়।
- হাপানী প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- ওজন হ্রাস।
- ক্যান্সার প্রতিরোধ।
- হাড়ের ক্ষয় রোধ।
- হজম শক্তি বাড়ায়।
- চুলপরা কমায়।
- বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে।
- মুখের গন্ধ দুর করে।
বিস্তারিত
১.রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
লেবুতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন "সি " বিদ্যমান রয়েছে। যা দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে। এই ভিটামিন "সি" প্রানীদের দেহে এমন একটি বিক্রিয়া উৎপন্ন করে যা দেহের ক্ষত পূরনে সাহায্য করে এবং ক্ষতের রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় ভুমিকা রাখে। শারীরিক ভাবে দুর্বল ব্যক্তিদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়াতেও ভিটামিন "সি" সমৃদ্ধ এই লেবু অনেক কার্যকর।
সকলের উচিত প্রাকৃতিক উৎস থেকে ভিটামিন "সি" সংগ্রহ করা, কেননা প্রাকৃতিক উৎস থেকে গৃহীত ভিটামিন" সি" দেহে যে কাজ করে তা কখনোই ভিটামিন "সি" পরিপূরক দ্বারা সম্ভব নয়। আর যেহেতু লেবু প্রচুর পরিমানে ভিটামিন " সি" সমৃদ্ধ তাই রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে লেবুর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
২.স্ট্রোকের ঝুকি কমায়
৭০০০০ মহিলাদের উপর ১৪ বছরের একটি গবেষণা চালানো হয়েছিল। সেই গবেষনায় দেখা গেছে যে সকল মহিলারা সাইট্রাস ফল খেয়েছেন সবচেয়ে বেশি, তাদের ইস্কেমিক স্ট্রোকের ঝুঁকি অন্যান্য মহিলাদের তুলনায় ১৯ শতাংশ কম ছিল। ইস্কেমিক হচ্ছে সবচেয়ে সাধারণ ধরনের স্ট্রোক। আর সাইট্রাস ফল হচ্ছে লেবু, মসাম্বি, লেবু কমলা লেবু এবং আঙ্গুর। তাছাড়া লেবুতে বিদ্যমান ফলিক এসিড স্ট্রোকের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৩. হাঁপানি প্রতিরোধে সহায়তা করে
লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা হাঁপানি দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক গ্লাস পানির মধ্যে সম্পূর্ণ একটা বাতাবি লেবুর রস আর সামান্য চিনি মিশিয়ে খেলে হাঁপানের কষ্ট অনেকটাই কমে যাবে।
৪. ওজন হ্রাস
লেবুতে বিদ্যমান প্যাক্টিন নামক ফাইবার দেহের ক্ষুদা কমাতে সাহায্য করে। তবে এই প্রক্রিয়ায় খোদা কমিয়ে ওজন কমাতে হলে প্রচুর পরিমাণে লেবুর রস খেতে হবে। কেননা একটি সম্পূর্ণ লেবুর রসে মাত্র 1 গ্রাম প্যাকটিন ফাইবার থাকে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অধিক চর্বিযুক্ত মানুষের দেহের চর্বি কমানোর ক্ষেত্রে লেবু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৫. ক্যান্সার প্রতিরোধ
লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে। স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে লেবু খুবই উপকারী।
তাছাড়া প্রোস্টেট ক্যান্সার, জরায়ু ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার ও অগ্নাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধেও লেবু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৬. হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ
লেবুতে বিদ্যমান ভিটামিন সি দেহে ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। যেই ক্যালসিয়ামের অভাবে দেহের হার ক্ষয়জনিত রোগ হয়। ভিটামিন সি দেহে ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে এবং যথাযথভাবে কাজে লাগার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এভাবে লেবু দেড় হাড় ক্ষয় রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৭. হজম শক্তি বাড়ায়
সুস্বাস্থ্য এবং দেহের সঠিক বিকাশের জন্য হজম শক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খাবার সঠিকভাবে হজম না হলে নানাবিধ শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই খাবার সঠিকভাবে হজম করার জন্য খাবারের সাথে লেবু রাখতে পারেন। কারণ লেবুতে বিদ্যমান পুষ্টি উপাদান ও সাইট্রিক এসিড খুব সহজেই খাবার হজম করতে সাহায্য করে।
৮. চুল পড়া কমায়
লেবুতে বিদ্যমান ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। যা চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
লেবুর জল মাথার ত্বকে ব্যবহার করলে মাথার ত্বকে আটকে থাকা ধুলো ময়লা পরিষ্কার হয়ে যায়।
৯. বমি বমি ভাব কমায়
বদ হজমের কারণে সৃষ্ট বমি বমি ভাব কিংবা বাসে ট্রাভেল করার সময় সৃষ্ট অস্বস্তিকর বমি বমি ভাব থেকে মুক্তি পেতে লেবুর রসের জুড়ি নেই।
১০. মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে খেতে পারেন লেবুর শরবত কিংবা লেবু চুষেও খেতে পারেন।
0 Comments